ডেস্ক রিপোর্ট : মহান আল্লাহর কাছে জীবনের সব গুনাহের ক্ষমা এবং অফুরান নেকি লাভের আশায় রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগির মধ্য দিয়ে গতকাল পবিত্র লাইলাতুল কদর বা শবে কদর পালন করেছেন ধর্মপ্রাণ মুসলমানেরা। কেউ বাসায়, কেউবা মসজিদে নফল নামাজ আদায়, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত ও যিকির-আযকার করে রাত কাটিয়েছেন। ধর্মপ্রাণ মানুষের অনেকেই আত্মীয়স্বজনের কবর জিয়ারত করে তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা করেছেন। শবে কদর উপলক্ষে মসজিদে মসজিদে বাড়তি মুসল্লির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়। জুমার দিনের মতো গতরাতেও মসজিদগুলোতে নামে মুসল্লির ঢল। খতমে তারাবীহ হয়েছে এমন মসজিদগুলোয় গতরাতে কুরআন মাজিদের শেষ অংশ তেলাওয়াতের মাধ্যমে পূর্ণ কুরআন মাজীদ সম্পন্ন করা হয়। যেসব হাফেয সাহেব পুরো ৩০ পারা তেলাওয়াত করেছেন এবং যে মুক্তাদিরা ইমামের পেছনে দাঁড়িয়ে কুরআন তেলাওয়াত শুনতে পেরেছেন তারা আল্লাহ তা‘আলার কাছে শুকরিয়া আদায় করেন।
শবে কদর মুসলমানদের কাছে অত্যন্ত মহিমান্বিত একটি রাত। এই রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়েও উত্তম। এই রাতে মুসলমানদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআন নাজিল হয় এবং এই রাতকে কেন্দ্র করে কোরআন শরিফে ‘আল-কদর’ নামে একটি সূরা অবতীর্ণ হয়। সূরায় আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আমি উহাকে (কুরআন) নাযিল করেছি লাইলাতুল কদরে। লাইলাতুল কদর কী সে সম্বন্ধে তুমি কী জান? লাইলাতুল কদর হচ্ছে হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিব্রাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত ফজরের সূচনা পর্যন্ত’।
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম, মহাখালীর মসজিদে গাউসুল আজম ছাড়াও রাজধানী ঢাকার অন্যান্য মসজিদ এবং সারা দেশের প্রায় সব মসজিদে গতরাতে ছিল উপচেপড়া ভিড়। ছোট-বড় সবাই রাত জেগে নিজ জীবনের গুনাহ-খাতা মাফ চেয়ে ইবাদাত করেছেন। মহিলাদের ব্যবস্থা থাকা মসজিদগুলোতে তারা শরিক হন ব্যাপক হারে। অনেক মসজিদে অনুষ্ঠিত হয় বিশেষ ওয়াজ ও বিশেষ দোয়া। ফজর নামাজের পর বিশেষ দোয়ায় দেশ ও জাতির সমৃদ্ধি কামনা করা হয়। এর আগে গতরাতে তারাবীহ নামাজের পর সারা দেশে মসজিদে মসজিদে ওয়াজ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। পবিত্র শবে কদর উপলক্ষে আজ রোববার সরকারি ছুটি থাকছে।
রাজধানী ঢাকার মতো সারা দেশের মসজিদেও গতরাতে ইবাদত-বন্দেগীতে সময় পার করেছেন মুসল্লিরা।