হাসান আরেফিন : বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ ও পর্যটনের গুরুত্ব তুলে ধরার জন্য এক অদম্য বাংলাদেশি বিশ্ব পর্যটক ও লেখক এলিজা বিনতে এলাহী। ভ্রমনের নেশায় সারা বাংলাদেশ ঘুরছেন তিনি। সম্প্রতি বরিশাল বিভাগ ভ্রমণে এসেছেন ভ্রমণকন্যা ও প্রত্নতত্ত্ব গবেষক এলিজা । মঙ্গলবার সকাল থেকে রাত অবধি তিনি ঝালকাঠির ঐতিহ্যবাহী স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখেন। এরই অংশ হিসেবে এসেছিলেন ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলায়। স্বাধীনতা দিবসে দিনব্যাপী এলিজা নলছিটির বাসষ্ট্যান্ড এলাকার বিজয় বিহঙ্গ, চায়না কবর,সুগন্ধা নদীসহ বিভিন্ন ঐতিহাসিক স্থাপনার ইতিবৃত্ত জানার চেষ্টা করেন। ঘুরে দেখার পাশাপাশি লিখিত তথ্য, লোককথা, স্থিরচিত্র ও ভিডিওগ্রাফির মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করেন। পাশাপাশি ফেসবুক লাইভে যুক্ত হয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার ইতিহাস ঐহিত্য তুলে ধরেন এ ভ্রমন পিপাসু। এলিজা মনে করেন, বাংলাদেশের প্রাকৃতিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক সৌন্দর্য খুবই সম্ভাবনাময়। এ অঞ্চলের সৌন্দর্য দেখে অবাক হয়েছিলেন চীনের পর্যটক হিউয়েনে সাং। এসব বিকশিত করা গেলে বাংলাদেশের ‘হেরিটেজ টুরিজম’ এ দেশের উন্নয়নে অনন্য অবদান রাখবে।
এলিজা তাঁর উপার্জিত অর্থে বাংলাদেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলো সংরক্ষণ এবং এগুলোর প্রতি দেশ-বিদেশের পর্যটকদের আকৃষ্ট করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করছেন। তাঁর ব্যক্তিগত উদ্যোগে গড়ে তোলা এই প্রকল্পের নাম ‘কোয়েস্ট’। বাংলাদেশের ইউনিভার্সিটি অব সাউথ এশিয়ার সহকারী অধ্যাপক এলিজা এ পর্যন্ত দেশের ঢাকা, ময়মনসিংহ, রংপুর, সিলেট ও রাজশাহী বিভাগের ৩৭টি জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য সংগ্রহের কাজ সম্পন্ন করেছেন। ষষ্ঠতম বিভাগ বরিশাল ভ্রমণ করছেন তিনি। ৩১ মার্চ পটুয়াখালী জেলা ভ্রমণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে বরিশাল বিভাগে তাঁর হেরিটেজ ট্যুর। শিক্ষা ছুটিতে থাকা নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগ ইউনিভার্সিটি অব অ্যাপ্লায়েড সায়েন্সে অধ্যয়নরত এই পর্যটকের গবেষণার বিষয়ও ‘বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প বিকাশে হেরিটেজ টুরিজমের গুরুত্ব’। বাংলাদেশ ছাড়াও তিনি এশিয়া ও ইউরোপের ৪৬টি দেশের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সরেজমিন দেখে তথ্য সংগ্রহ করেছেন।