কে এম সবুজ :
চুলের একপাশ কাটা। তার ওপর মোটা করে কয়েকটি দাগ। কারো চুলের দুই পাশেই নেই, মাঝখানে উঁচু। কেউ আবার জেল মেখে সোজা করে রেখেছেন। সকাল হলেই ঝালকাঠি শহরের স্কুল-কলেজের সামনে দেখা যায় তাদের। মেয়েরা বখাটে হিসেবে এসব যুবকদের আখ্যায়িত করে। অনেক সময় তাদের দেখে ভয়ও পাচ্ছে মেয়েরা। ছেলেদের এ ধরণের বখাটে স্টাইলে চুল কাটা বন্ধে উদ্যোগ নিয়েছে জেলা পুলিশ। ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসান সেলুন মালিকদের নিয়ে বৈঠক করেন। তিনি সেলুন মালিকদের বখাটে স্টাইলে চুল কাটা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দেন। এর ফলে দুই-তিন দিনধরে শহরের সেলুনগুলোতে স্টাইল করে চুল কাটা বন্ধ হয়েছে। শিক্ষার্থীদের চুলের স্টাইল হবে মার্জিত এ ¯েøাগান দিয়ে বিভিন্ন স্থানে প্রচারও শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশের একাধিক সূত্রে জানা যায়, ঝালকাঠি শহরের অর্ধশত সেলুন রয়েছে। এসব সেলুনে যুবকরা নানা স্টাইলে চুল কাটেন। চুল কেটে তারা সকাল হলেই শহরের স্কুল ও কলেজের সামনে এসে আড্ডা দেয়। চুলের স্টাইল দেখে মেয়েরা ভয় পায়। চুলের এ ধরণের বখাটে স্টাইল চোখে পড়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুরিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসানের। তিনি স্কুল ও কলেজ পড়–য়া কয়েকজন মেয়ের সঙ্গে কথা বলে বখাটেপনা ও চুলের স্টাইলের ভয়ের কথা জানতে পারেন। অবশেষে তিনি সেলুন মালিকদের নিয়ে সম্প্রতি বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি সেলুন মালিকদের মার্জিতভাবে চুল কাটার পরামর্শ দেন। পুলিশের এ উদ্যোগে খুশি অভিভাবকরাও। জেলা পুলিশের এ ধরণের নির্দেশের পর থেকে শহরের সেলুনগুলোতে দুই-তিন দিন আগে থেকে বখাটে স্টাইলে চুল কাটা বন্ধ হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির এক ছাত্রী বলেন, আমাদের স্কুলের সামনে সকাল মোটরসাইকেল নিয়ে বিভিন্ন স্টাইলে চুল কাটা ছেলেরা ঘোরাফেরা করে। তাদের দেখতে ভয় লাগে। শুধু চুল কাটাই নয়, অনেক ছেলে এমনভাবে ইদানিং দাড়ি রাখছেন, তা দেখেও ভয় লাগে।
ঝালকাঠি সরকারি মহিলা কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, ছেলেরা মনে করে স্টাইল করে চুল কাটলে তাদেরকে মেয়েরা পছন্দ করবে। কিন্তু তাদের উল্টোভাবে যে মেয়েরা অপছন্দ করে সেটা মনে হয় তারা জানেন না। বখাটে স্টাইলে চুল কাটা আমরাও পছন্দ করি না। আমাদের অভিভাবকরাও এটা মেনে নেয় না। আমরা চাই কলেজের সামনে এ ধরণের কোন বখাটে যেন আড্ডা দিতে না পারে, সেজন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ছাত্রীরা।
এ ব্যাপারে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এম এম মাহামুদ হাসান বলেন, আমরা শহরের বিভিন্ন স্কুল ও কলেজে স্টুডেন্ট কমিউনিটি পুলিশিং ফোরামের সভা করেছি। এসব সভায় মেয়েরা অভিযোগ করেছেন ছেলেদের চুলের স্টাইল নিয়ে। এমনভাবে তারা চুল কাটে, যে দেখলে মেয়েরা ভয় পায়। আমরা বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সেলুন মালিকদের সংগঠন নরসুন্দর কমিটির লোকজনের সঙ্গে বৈঠক করেছি। তাদের নির্দেশ দিয়েছি বখাটে স্টাইলে চুল যে না কাটা হয়। আমাদের সঙ্গে তারাও একমত হয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে অভিভাবকরাও আমাদের উদ্যোগের প্রসংশা করেছেন। আমরা চাই শিক্ষর্থীদের চুলের স্টাইল হবে মার্জিত।