স্থানীয় প্রতিনিধি :
উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ায় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলের বিদ্রোহী প্রার্থীর কর্মীসমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে উভয় পক্ষের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আমুয়া ইউনিয়নের তালতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এসময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এমাদুল হক মনিরের লোকজন বিদ্রোহী প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কিবরিয়া সিকদারের নির্বাচনী কার্যালয় ভাংচুর করে। তাঁরা কিবরিয়া সিকদারকে স্থানীয় একটি বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আহত সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার সকালে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিকভাবে প্রচারণায় নামে প্রার্থীরা। বিকেল ৫টার দিকে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমাদুল হক মনিরের বাড়ির কাছাকাছি দলের বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কিবরিয়া সিকদারের নির্বাচনী কার্যালয় উদ্বোধনের জন্য কর্মীসমর্থকদের নিয়ে যান। খবর পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী এমাদুল হক মনিরের কর্মীসমর্থকরা লাঠিসোটা নিয়ে অফিস ভাংচুর ও প্রতিপক্ষের ওপর হামলা চালায়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী কিবরিয়া সিকদারের সমর্থক কাঁঠালিয়া সদর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম কবির সিকদার, আওয়ামী লীগকর্মী কবির মৃধা ও মো. রাসেলসহ ১৫ জন আহত হয়। সংঘর্ষে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর কর্মীসমর্থক ছাত্রলীগকর্মী সায়িদ জিসান সিকদার, এনায়েত হোসেন ও তানজিল হাসান জনিসহ পাঁচ জন আহত হয়। এদের মধ্যে গুরুতর অবস্থায় কয়েকজনকে কাঁঠালিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে (আমুয়া) ভর্তি করা হয়। এদিকে হামলা সংঘর্ষের সময় বিদ্রোহী প্রার্থী কিবরিয়া সিকদার তালতলা এলাকার কৌসিক সেনের বাড়িতে আশ্রয় নিলে প্রতিপক্ষরা তাকে বাড়ির ভেতর অবরুদ্ধ করে রাখে। খবর পেয়ে ঝালকাঠির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সার্কেল) মো. মোজাম্মেল হোসেন রেজা ও কাঁঠালিয়া থানার ওসি আবদুস সালামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত (রাত ৮টা) তালতলা এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এমাদুল হক মনির বলেন, কবির সিকদারের লোকজন আমার নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করলে, আমাদের লোকজন তা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত হয়েছে।
এ ব্যাপারে বিদ্রোহী প্রার্থী কিবরিয়া সিকদারের মুঠোফোনে কল করে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিবরিয়া সিকদারের একাধিক কর্মীসমর্থকরা জানিয়েছেন, এমাদুল হক মনিরের লোকজন অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে তাদের পক্ষের ১৫/২০জন আহত হয়েছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। কিবরিয়া সিকদারকে এখনো অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাকে কেউ উদ্ধার করতে পারেনি। তিনি নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন।
কাঁঠালিয়া থানার ওসি (ভারপ্রাপ্ত) আবদুস সালাম বলেন, উভয় পক্ষের সংঘর্ষের খবর শুনে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিনি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। দুই পক্ষকে দুই দিকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আমরা রাতেই অবরুদ্ধ প্রার্থীকে উদ্ধার করে নিরাপদে বাড়িতে পৌঁছে দেবো।