Latest News
রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৯ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / আন্তর্জাতিক / মালয় রাজনীতির নতুন চমক আনোয়ার ইব্রাহিম
Jailed former opposition leader and current federal opposition leader Anwar Ibrahim (R) with his wife Wan Azizah (L) greet the supporters during a rally in Kuala Lumpur on May 16, 2018. Reformist Anwar Ibrahim declared a "new dawn for Malaysia" on May 16 after his release from prison transformed him into a potential prime minister following his alliance's stunning election victory. / AFP PHOTO / Roslan RAHMAN

মালয় রাজনীতির নতুন চমক আনোয়ার ইব্রাহিম

ডেস্ক রিপোর্ট : জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন মালয়েশিয়ার সাবেক উপপ্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম। দীর্ঘদিন কারাভোগের পর দেশটির রাজার পক্ষ থেকে নিঃশর্ত ক্ষমা পেয়ে বুধবার বেলা ১২টার দিকে মুক্তি পান তিনি। এদিন সকালে আনোয়ারকে ক্ষমা ঘোষণা করা হয়। মালয়েশিয়ার নতুন নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ তার এ ক্ষমার জন্য আবেদন করেন। কিন্তু এক সময় মাহাথিরই তাকে কারাগারে পাঠিয়েছিলেন।মালয়েশিয়ার পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন তিনি। এ ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছেন মাহাথির। আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আনোয়ারের এ মুক্তি তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে একেবারেই নতুন চমক হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এবং এটা অনেকটা হলিউডের সিনেমার গল্পের মতো। আনোয়ারের রাজনৈতিক জীবন নিয়ে যদি কোনো সিনেমা তৈরি করা হয়, তাহলে গল্পটা হবে এমন- রাজনীতিতে এক স্বপ্নবাজ তরুণের উত্থান। ১৯৯০-এর দশকে সরকার সংস্কার আন্দোলনের নেতা হিসেবে তার রাজনীতির শুরু। সংস্কার আন্দোলন কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে কুয়ালালামপুরের রাজপথ কাঁপাচ্ছেন তিনি। এমনই এক আন্দোলনে দেশটির পুলিশ প্রধানের লাঠিচার্জ। মারের চোটে মাটিতে শুয়ে পড়েছেন তিনি।

অন্যদিকে তার সমর্থকরা উচ্চকিত কণ্ঠে স্লোগান দিচ্ছেন, রিফর্মাসি, রিফর্ম ইন বাহাসা। অর্থাৎ সরকার সংস্কার করতে হবে, করতে হবে, করতে হবে। সেদিনের রাজপথের এ দৃশ্য সারা বিশ্বের রাজনীতি সচেতন মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। রাতারাতিই হিরো হয়ে যান আনোয়ার। বিশ্লেষকরাও সে কথাই বলছেন। জন কাবত বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক ব্রিজিত ওয়েলশ বলেন, ওই দৃশ্যটাই মালয়েশীয়দের জন্য একটা টার্নিং পয়েন্ট। ওয়েলশ বলেন, ‘এটা আসলেই উল্লেখযোগ্য একটা ব্যাপার যা মালয়েশিয়া এর আগে কখনও দেখেনি। এ ঘটনা মালয় সমাজে ব্যাপক সাড়া ফেলে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মূলত এরপর থেকেই সেখানকার সুশীল সমাজের বিস্তার ঘটে এবং এটার পরিপূর্ণ বিকাশ ঘটেছে। কারণ ১৯৯৯ সালের সেই রিফর্মাসি আন্দোলনের ঐতিহ্যই দেশটির পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনগুলোতে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। এর মাধ্যমেই দেশটির সাধারণ নাগরিকরা সচেতন হয়েছেন তাদের নেতা নির্বাচনে।’ শুরু থেকেই রাজনৈতিক উচ্চাকাক্সক্ষা পোষণ করতেন আনোয়ার ইব্রাহিম। ৭০-এর দশকের একজন সফল ছাত্র নেতা থেকে ৯০-এর দশকের একজন আদর্শ ক্যারিশমেটিক নেতা। এরপর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মাহাথিরের ডানহাত হয়ে ওঠা। উপপ্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি। কিন্তু ১৯৯৭ সালে মালয়েশিয়ার অর্থনীতি চাপের মধ্যে পড়ায় মাহাথিরের সঙ্গে তার সম্পর্ক তিক্ত হতে থাকে।

মতানৈক্য আরও বাড়ে যখন আনোয়ার সরকারে বড় ধরনের সংস্কারের আহ্বান জানান। তার এই সংস্কারের ডাক মাহাথিরের নেতৃত্বকেই হুমকিতে ফেলে। ওয়েলশ বলেন, আনোয়ার মূলত মাহাথিরকেই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বসেন। ১৯৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে আনোয়ারকে পদচ্যুত করা হয়।পদচ্যুত হওয়ার পর মাহাথিরের বিরুদ্ধে রিফর্মাসি আন্দোলন শুরু করেন তিনি। পরিণামে সমকামিতা ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০০৪ সালে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। বড় ধরনের পতনের শিকার হন আনোয়ার।