Latest News
সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪ ।। ১০ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / আইন-আদালত / শিল্পমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাদাবি: সেই ইয়াসিন গ্রেপ্তার

শিল্পমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাদাবি: সেই ইয়াসিন গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠি মেঘনা পেট্রলিয়াম কোম্পানির ম্যানেজারের কাছে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নাম ভাঙ্গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদাদাবি মামলার প্রধান আসামী মো. ইয়াসিন ভুইয়াকে (৩৪) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ৯ টার দিকে শহরের পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ঘটনার ১১ দিন পর ইয়াসিন গ্রেপ্তার হলো।
পুলিশ জানায়, পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার আবদুস ছত্তার হাওলাদারের বাসভবনের একটি কক্ষে লুকিয়ে ছিল ইয়াসিন। কক্ষের দরজার বাইরে তালাবদ্ধ করে ভেতরে থাকতো সে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ ওই বাসায় যায়। কক্ষের তালা ভেঙে ভেতরে গিয়ে ইয়াসিনকে খুঁজতে থাকে পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে ইয়াসিন রান্না ঘরের এক কোনে লুকিয়ে পড়ে। অনেক খোঁজাখুজির পরে তাকে দেখতে পায় পুলিশ। গ্রেপ্তার করে তাকে থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন ভুইয়া শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার আবদুর রশিদ ভুইয়ার ছেলে।
জানা যায়, শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার বাসিন্দা, সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসিন ২১ এপ্রিল দুপুরে মেঘনা পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের জেলা ডিপো ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবর রহমানকে মোবাইল ফোনে কল দেন। ডিপো ব্যবস্থাপক কল গ্রহণ করলে অন্য প্রান্ত থেকে শিল্পমন্ত্রীর লোক পরিচয় দিয়ে তাঁর অবস্থান জানতে চান ইয়াসিন। ডিপো ব্যবস্থাপক বাইরে আছেন জানালে ইয়াসিন রবিবার দুপুরে তাঁর কার্যালয়ে যাবেন বলে জানান। ২২ এপ্রিল দুপুর ১২.৪০ মিনিটের দিকে ইয়াসিন শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন এবং আরো এক পুলিশ সদস্যকে নিয়ে একটি কালো রঙের প্রাইভেট কারে মেঘনা ডিপোতে যান। ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢুকে বসেন তিনজন। ডিপো ব্যবস্থাপককে একটি শপিং ব্যাগে উপহারসামগ্রী তুলে দিয়ে ইয়াসিন জানান, এ উপহার শিল্পমন্ত্রী তাঁর জন্য পাঠিয়েছেন। এরপর ইয়াসিন মুঠোফোনে একজনের কাছে কল দিয়ে ডিপো ব্যবস্থাপককে শিল্পমন্ত্রী কথা বলবেন বলে ফোন ধরিয়ে দেন। ফোনের অন্য প্রান্ত থেকে ডিপো ব্যবস্থাপককে বলা হয়, ‘ওরা আমার লোক, যা বলে সে অনুযায়ী কাজ করুন। ’ এরপর ফোন কেটে দিলে ইয়াসিন শিল্পমন্ত্রীর কথা বলে ব্যবস্থাপকের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। ব্যবস্থাপক অবাক হয়ে বলেন, তিনি দুই লাখ টাকা কোথায় পাবেন। ইয়াসিন তখন বলেন, যা পারেন তাই দেন। বিষয়টিতে সন্দেহ হলে ব্যবস্থাপক কক্ষের ভেতরে তিনজনকে বসিয়ে বাইরে বের হয়ে অফিসের অন্য স্টাফদের সঙ্গে বিষয়টি আলোচনা করে থানায় ফোন দেন। থানা থেকে উপপরিদর্শক মিঠুনকে মেঘনা ডিপোতে পাঠানো হয়। উপপরিদর্শক মিঠুনকে দেখে ইয়াসিন ও তাঁর সঙ্গীরা কৌশলে বের হয়ে গাড়িতে করে পালিয়ে যান। সম্পূর্ণ বিষয়টি ডিপোতে লাগানো সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়।
সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, একটি শপিং ব্যাগের মধ্যে কসমেটিক সামগ্রী নিয়ে ইয়াসিন ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে প্রবেশ করেন। তাঁর পেছন পেছন ঢোকেন উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন ও কনস্টেবল সমির।
ঝালকাঠি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইয়াসিনের খবর পেয়ে একদল পুলিশ পূর্বচাঁদকাঠির একটি ভবন চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি। পরে একটি কক্ষের রান্নাঘর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।