ডেস্ক রিপোর্ট :
কারারুদ্ধ বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার হঠাৎ অসুস্থতার সংবাদে উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে তার উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত মুক্তি দাবি করেছে বিএনপি। শুক্রবার সকালে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনেবিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড.খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. মামুন আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট করে তার অসুস্থতার বিষয়ে কিছুই জানতে পারিনি যে, আসলে তার অবস্থা কী? সব স্বৈরশাসকরা বিরোধী দলের নেতাদের নিঃশেষ করার জন্য যে প্রক্রিয়া চালায়, আমাদের আশঙ্কা বেগম জিয়ার সঙ্গেও সরকার সেটাই করতে চাচ্ছে। ফখরুল বলেন, এ মুহূর্তে আমরা তার নিঃশর্ত মুক্তি চাচ্ছি, যাতে তার সুচিকিৎসা করানো যায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশনেত্রীর হঠাৎ অসুস্থার খবরে আমরা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন ও উৎকন্ঠিত। যে কারণে আমাদের সাক্ষাৎ বাতিল করা হয়েছে। কারাগারে মেডিক্যাল টিম পাঠানো হয়েছে কী না জানি না। এমতাবস্থায় আমরা খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিসৎক দলকে কারাগারে পাঠানোর দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, সুপরিকল্পিতভাবে দেশনেত্রীকে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছেই। এই সরকার অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সুপরিকল্পিতভাবে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে হয়রানি করছে। সবশেষ তাকে এখন কারারুদ্ধ করেছে।
সরকার খালেদা জিয়াকে নিয়ে চক্রান্ত করছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে একটি জীর্ণ ও পরিত্যক্ত ভবনে নির্জনে আটক রাখা হয়েছে। সেখানে অন্য কেউ নেই। তাকে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। সুচিকিৎসা থেকেও বঞ্চিত করা হচ্ছে। আমরা অবিলম্বে তার স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য চাই।
মির্জা ফখরুল খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ক্ষেত্রে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, দেশনেত্রীর চিকিৎসার জন্য আমাদের স্পষ্ট প্রস্তাব রয়েছে। তার (খালেদা জিয়া) ব্যক্তিগত চিকিৎসক যারা রয়েছেন, তাদের দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। চিকিৎসকদের সুপারিশ অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নিতে হবে। এজন্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা হচ্ছে, যেটা তার প্রাপ্য তাকে জামিনে মুক্তি দিয়ে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন,খালেদা জিয়াকে নির্জন কারাগারে রেখে সরকার মানসিক নির্যাতন করছে। তাকে যে পরিবেশে রাখা হয়েছে, তাতে স্বাস্থ্যের আরও অবনতির আশঙ্কা করছি আমরা। তিনি (খালোদা জিয়া) আগে যে চিকিৎসাগুলো নিয়েছেন, তা বিদেশে নিয়েছেন। তার ফলোআপ করাটা জরুরি।
এদিকে বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে দলের সিনিয়র নেতা ও আইনজীবীদের নিয়ে বৈঠক করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বৈঠকে খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা এবং দুদকের সাজা বাড়ানোর আবেদনের বিষয়ে আলোচনা করা হয়। বৃহস্পতিবার বেলা ৩টায় কারাবন্দী খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল মির্জা ফখরুলের। কিন্তু খালেদা জিয়া অসুস্থ থাকার কারণে দেখা করেননি। এর আগে বুধবার অসুস্থতার কারণ উল্লেখ করে খালেদা জিয়ার আদালতে হাজির করা হয়নি।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট্র দুর্নীতির মামলার রায়ে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর সাজা হয় গত ৮ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন বিকাল থেকে নাজিমউদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন তিনি। (সূত্র ইত্তেফাক অনলাই)