স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠির সরকারি হরচন্দ্র উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় চলতি মাসের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মচারীরা। ৩ বছর ধরে এ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ভারপ্রাপ্ত হিসেবে সহকারী শিক্ষক আবু সাইদ মো. ফরিদ হোসেন দায়িত্ব পালন করেন। সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে হোসনেয়ারা আরজুকে নামে এক শিক্ষিকাকে ২৯ মার্চ এ বিদ্যালয়ে বদলী করা হয়। ১২এপ্রিল বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনি পেছনের তারিখে ৫এপ্রিল থেকে যোগদান দেখিয়ে স্বাক্ষর করেন। ১২এপ্রিল বিকেলে তড়িঘরি স্বাক্ষর শেষে দায়িত্বগ্রহণ না করেই তিনি একটি ছুটির আবেদন রেখে চলে যান। যদিও বিধি অনুযায়ী তিনি যোগদানের সঙ্গে সঙ্গেই সয়ংক্রিয়ভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পাবেন। কিন্তু তিনি স্কুলের আয়-ব্যায় হিসাব রক্ষার জন্য চিঠি প্রেরণ, আয়-ব্যয় কর্মকর্তার দায়িত্ব গ্রহণ, অন্যান্য শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন ছাড় না করাসহ যোগদানের পরবর্তী কোন কার্যক্রম সম্পন্ন না করেই বরিশালের বাসায় চলে যান। ছুটির এক সপ্তাহ পার হয়ে আরো তিন দিন চলে গেলেও তিনি বিদ্যালয়ে আসেননি। এমনকি বিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রের কোন ডকুমেন্টও তিনি রেখে যাননি অফিসে। এদিকে রমজানে শিক্ষক-কর্মচারীরা এপ্রিল মাসের বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তায় পরেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হোসনেয়ারা আরজু আগের কর্মস্থল ঝালকাঠি সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ে আড়াই বছর ঠিকমতো ক্লাসে যাননি। এই শিক্ষক ১২এপ্রিল (সোমবার) বিকেল সাড়ে চারটায় যোগদান করে পেছনের তারিখ ৫এপ্রিল থেকে স্বাক্ষর করে আবারো ছুটি নেন। সাত দিনের জন্য কর্মস্থল ত্যাগের ছুটির আবেদনের মেয়াদ শেষ হয়ে তিন দিন অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয়ে আসেননি।
জানা যায়, ২০১৯ সালে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ সাহা বদলি হয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় শূন্য রয়ে যায় পদটি। আগে থেকেই বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষকের পদও শূন্য ছিল। ওই বছরের ১৬ এপ্রিল শর্তসাপেক্ষে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেব দায়িত্ব দেওয়া হয় সহকারী শিক্ষক আবু সাঈদ মো. ফরিদ হোসেনকে। ২০১৯ সালের ১৩ মে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহপিরিচালক প্রফেসর ড. সৈয়দ গোলাম ফারুক স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে চারটি শর্ত দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম শর্ত হচ্ছে শূন্যপদে প্রধান শিক্ষক অথবা জ্যেষ্ঠতম সহকারী প্রধান শিক্ষক যোগদান করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিনি এ আদেশের প্রদত্ত ক্ষমতা বিলুপ্ত হবে। অর্থাৎ নতুন যিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করবেন তিনিই দায়িত্ব পেয়ে যাবেন। হোসনেয়ারা আরজু দায়িত্ব পাওয়ার পরে নিয়মানুযায়ী তিনি বিদ্যালয়ের ব্যাংক হিসাব এবং ডিজি’র কাছে চিঠি পাঠাবেন। কিন্তু তিনি এসব কিছু না করেই সাতদিনে ছুটির আবেদন করেন অবৈধ প্রক্রিয়ায়। ৫ এপ্রিল যোগদান দেখিয়ে তাঁর পক্ষে বিভিন্ন স্থানে মেইল পাঠানো হয় ১২ এপ্রিল। প্রকৃতপক্ষে ১২ এপ্রিল বিকেলে তিনি বিদ্যালয়ে আসেন, যা বিদ্যালয়ের সিটিটিভির ফুটেজে সংরক্ষিত রয়েছে।
কেন তিনি পেছনের তারিখ দেখিয়ে যোগদান করলেন এ বিষয়ে জানার জন্য তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল কলেও পাওয়া যায়নি। পরে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে বার্তা পাঠালেও তিনি তার জবাব দেননি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের কয়েকজন সিনিয়র শিক্ষক জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পাঠানো চিঠির কপিটি নতুন যোগদানকারী সহকারী প্রধান শিক্ষকের কাছে দিলেও তিনি তা পড়ে দেখেননি। এটা পড়লে, তিনি যদি ছুটিতেও যান তাহলে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একজনকে দায়িত্ব দিতে হবে। কিন্তু আবু সাঈদ মো. ফরিদ হোসেনকে অবৈধভাবে দায়িত্ব দেওয়ার জন্যই তিনি তড়িঘড়ি করে যোগদান করেন, আবার দ্রæত বরিশাল চলে যান। এতে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়েছে। শিক্ষকরাও দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হলে এর প্রভাব শিক্ষার্থীদের মাঝেও পড়বে বলে মনে করেন অনেক শিক্ষক।
এ ব্যাপারে বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আনোয়ার হোসেন ঝালকাঠি সরকারি হরচন্দ্র বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সংকটের কথা শুনে বলেন, বিদ্যালয়ের এ বিষয়ে আমি পরে কথা বলবো। আমি অন্যকাজে ব্যস্ত আছি।
Home / জাতীয় / সরকারি হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের শূন্যতায় বেতন নিয়ে দুশ্চিন্তায় শিক্ষকরা
জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ
বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীরা আ.লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে …