স্টাফ রিপোর্টার :
কিছুদিন আগেও ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাউকাঠি বাজারের কাছে ফুটপাতে জুতা সেলাই করে সংসার চালাত সবিতা রানী দাস। রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে চলতো তাঁর নিত্য দিনের কাজ। নারী মুচির এ দুর্দশার কথা শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে এগিয়ে এলেন ঝালকাঠি পৌর যুবলীগের যুগ্মআহ্বায়ক বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ছবির হোসেন। তিনি নিজস্ব অর্থ ব্যয়ে দেড় লাখ টাকায় সবিতাকে দোকান ঘর, সাজসরঞ্জাম ও মালামাল কিনে দিয়েছেন। বুধবার আনুষ্ঠানিকভাবে সাবিতার কাছে দোকানটি হস্তান্তর করা হয়। ফলে পিতা মুত্যর ১২ বছর পর অবসান হলো সবিতার ফুটপাতের জীবন।
কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সবিতা বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পরে ১২ বছর ধরে আমি মানুষের জুতা সেলাই (মুচি) কাজ করে কোন রকমের সংসার চালাচ্ছি। কখনো তিন বেলা খেয়েছি, কখনো রোজগার না হওয়ায় না খেয়েই থাকতে হয়েছে। একটি খুপড়ি ঘরে পলিথিনের বেড়া দিয়ে এখনো বসবাস করছি। আমি যেভাবে কষ্ট করে জীবন যাপন করেছি, আর কোন নারীর যেন এমনটি না হয়। আমি একজন সফল ব্যবসায়ী হতে চাই। পলাশ রায়ের মসাধ্যমে আমাকে আজকে সবির ভাই সহযোগিতা করেছেন, আমিও চেষ্টা করবো একদিন অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে। ব্যবসায়ী ছবির হোসেন বলেন, আমার বন্ধু পলাশ রায়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে সবিতাকে একদিন দেখতে আসি। সে দুপুরে খাবার খাওয়ার টাকাও রোজগার করতে পারেনি দেখে খুবই কষ্ট পেলাম। নিজের বিবেকের তাড়নায় সবিতাকে একটি দোকান ঘর কিনে তাতে মালামাল কিনে দিয়েছি। এখন নিশ্চিন্তে সে ব্যবসা করে রোজগার করতে পারবে।
সাংবাদিক পলাশ রায় বলেন, সবিতা রাষ্ট্র ও সমাজপতিদের ওপর সংক্ষুব্ধ ছিল। তাকে কেউ কখনো সহযোগিতা করেনি। আমি তাঁর দুঃখ দুর্দশার কথা আমার বন্ধু ছবির হোসেনকে বলেছি। সে সবিতার সব খবর নিয়ে তাকে একটি দোকান ও মালামাল কিনে দিয়েছে। এখন হয়তো সবিতার কষ্টের দিন কেটে যাবে।
নবগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান আকন্দ বলেন, সবিতার জীবন সংগ্রাম আমরা দেখেছি। তাকে সাধ্যমত সহযোগিতা করেছি। তবে ছবির হোসেন তাকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটা প্রশংসনিয়। এখন তাকে কেউ একটি বসতঘর তুলে দিলেই রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে।