স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠির মেঘনা ডিপো পেট্রোলিয়াম লিমিটেডের ব্যবস্থাপকের কাছে শিল্পমন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে চাঁদাদাবির ঘটনা নিয়ে জনমনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। শিল্পমন্ত্রী সেজে মুঠোফোনে ডিপো ব্যাবস্থাপকের সঙ্গে কে কথা বলেছিল, তা এখনো জানা যায়নি। এ ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মামলার আসামী ছাত্রদলের সাবেক নেতা ইয়াসিন ভূঁইয়ার অবস্থান সনাক্ত করতে কাজ করছে পুলিশ। সে বর্তমানে ঢাকায় গাঢাকা দিয়ে রয়েছে।
শুধু মেঘনা ডিপোতে চাঁদাদাবিই নয়, ইয়াসিনের বিরুদ্ধে রয়েছে বিভিন্ন মন্ত্রীর মান ভাঙিয়ে ঝালকাঠিতে চাঁদাদাবির একাধিক অভিযোগ। তবে প্রশ্ন হচ্ছে কে সেই ব্যক্তি, যিনি মন্ত্রী সেজে মুঠোফোনে অপপ্রান্ত থেকে কথা বলেন? মেঘনা ডিপোর জেলা ব্যবস্থাপকের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদাদাবির পরেই বের হয়ে আসছে নতুন নতুন তথ্য। ইয়াসিন ঝালকাঠি শহরে আরো কয়েকটি ঘটনার নায়ক বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন।
কে এই ইয়াসিন!
ঝালকাঠি শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার মৃত আবদুর রশিদ ভূঁইয়া ছিলেন একজন হাবিলদার। তার নয় ছেলের মধ্যে ইয়াছিন ভূঁইয়া একজন। তাদের পৈত্রিক বাড়ি নোয়াখালী। বাবার চাকরির সুবাদে ঝালকাঠিতেই বসবাস শুরু করে তারা। ডাক্তারপট্টিতে দীর্ঘ দিনধরে একটি টিনসেডের বাসায় থাকেন তারা। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রদলের সদস্য ছিলেন ইয়সিন। দল ক্ষমতা হারানোর পরে দলীয় কার্যক্রমে তাকে দেখা যায় না। অভিযোগ রয়েছে, মানুষকে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে ইয়াসিন। তাঁর সঙ্গে রয়েছে একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তাকে প্রতিনিয়ত এ কাজে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন তারা। এমনকি বিভিন্ন মন্ত্রী সেজে কথা বলা ব্যক্তিরাও রয়েছেন এ চক্রের সঙ্গে। গত ২২ এপ্রিল মেঘনা ডিপোর জেলা ব্যবস্থাপক মো. মাহবুবর রহমানের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদাদাবি করে ইয়াসিন। এসময় সে শিল্পমন্ত্রী সাজিয়ে এক ব্যক্তির সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বলিয়ে দেয় ডিপো ব্যবস্থাপকের সঙ্গে। শুধু ডিপো ব্যবস্থাপক নয়, ঝালকাঠি শহরের এক মিষ্টির দোকানীকে ভ্রাম্যমান আদালতে জরিমানার ভয় দেখিয়ে টাকা নেওয়া অভিযোগ রয়েছে ইয়াসিনের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ঝালকাঠি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষক এবং হরচন্দ্র বালিকা বিদ্যালয়ের এক শিক্ষককে শিক্ষামন্ত্রীর ভয় দেখিয়ে টাকা নেয় সে। তাদের বিরুদ্ধে কোচিং করানো অভিযোগ দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। এ ক্ষেত্রেও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে মুঠোফোনে তাদের কথা বলিয়ে দেয় ইয়াসিন। মন্ত্রী সেজে মুঠোফোনের অপরপ্রান্ত থেকে কে কথা বলছেন এ নিয়ে শহরবাসীর মধ্যে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ঝালকাঠি থানার ওসি আবু তাহের বলেন, আমরা ডিপো ব্যবস্থাপকের কাছ থেকে ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। মোবাইলে কে শিল্পমন্ত্রী সেজে কথা বলেছিল তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।