স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠি মেঘনা পেট্রলিয়াম কোম্পানির ব্যবস্থাপকের কাছে শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর নাম ভাঙ্গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদাদাবি মামলার আসামী মো. ইয়াসিন ভূঁইয়ার (৩৪) তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ রবিবার দুপুরে ঝালকাঠির জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে শুনানি শেষে বিচারক এইচ এম কবির হোসেন রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। গত ৩ মে রাত ৯ টার দিকে শহরের পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরের দিন আদালতে হাজির করে তার পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ। আদালত ১৩ মে রিমাণ্ড শুনানির দিন ধার্য করে ইয়াসিনকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পুলিশ জানায়, রিমান্ডে নিয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এ ঘটনার সঙ্গে আরো কারা জড়িত আছে তাদের সনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। শিল্পমন্ত্রী সেজে মুঠোফোনে কে কথা বলছিল, তাও বের করা হবে।
মামলার বিবরণে জানা যায়, সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. ইয়াসিন ভূঁইয়া গত ২২ এপ্রিল দুপুর ১২.৪০ মিনিটের দিকে শহরের ফায়ার সার্ভিস মোড়ের টাউন পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক মো. বশির উদ্দিন এবং আরো এক পুলিশ সদস্যকে নিয়ে একটি কালো রঙের প্রাইভেটকারে মেঘনা ডিপোতে যান। ডিপো ব্যবস্থাপকের কক্ষে ঢোকেন তারা। ডিপো ব্যবস্থাপককে একটি শপিং ব্যাগে উপহারসামগ্রী তুলে দিয়ে ইয়াসিন জানান, এ উপহার শিল্পমন্ত্রী তাঁর জন্য পাঠিয়েছেন। এরপর ইয়াসিন মুঠোফোনে একজনের কাছে কল দিয়ে ডিপো ব্যবস্থাপককে শিল্পমন্ত্রী কথা বলবেন বলে ফোন ধরিয়ে দেন। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে ডিপো ব্যবস্থাপককে বলা হয়, ‘ওরা আমার লোক, যা বলে সে অনুযায়ী কাজ করুন। ’ এরপর ফোন কেটে দিলে ইয়াসিন শিল্পমন্ত্রীর কথা বলে ব্যবস্থাপকের কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। সম্পূর্ণ বিষয়টি ডিপোতে লাগানো সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড হয়। এ ঘটনায় পরের দিন ডিপো ব্যবস্থাপক বাদী হয়ে ঝালকাঠি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ঘটনার ১১ দিন পরে পূর্বচাঁদকাঠি এলাকার আবদুস ছত্তার হাওলাদারের বাসভবনের একটি কক্ষ থেকে ইয়াসিনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃত ইয়াসিন ভূঁইয়া শহরের ডাক্তারপট্টি এলাকার মৃত আবদুর রশিদ ভূঁইয়ার ছেলে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝালকাঠি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ইয়াসিনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে পাঁচ দিনের রিমাণ্ড আবেদন করা হয়েছিল। আদালত তিন দিনের রিমাণ্ড মঞ্জুর করেছে। জিজ্ঞাসাবাদ করে তার কাছ থেকে ঘটনার বিস্তারিত জানতে হবে। এর সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কিনা তাও জানা যাবে।