মেহেদী হাসান জসীম : তরুন বয়সে প্রচন্ড শক্তিশালী সনু মিয়ার সবকিছুই ছিল। স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে নিয়ে দিনমজুর সনু মিয়ার সংসারে আনন্দের কমতি ছিল না। অথচ বর্তমানে ৮৫ বছর বয়সী সনু মিয়ার কিছুই নেই। নিঃসঙ্গগতাই তাঁর একমাত্র সম্বল। ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদরের বাঘড়ি বাজার সংলগ্ন একটি ঝুপড়ি ঘরে সনু মিয়া একাকি মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তাইতো অসহায় সনু মিয়া খোঁজ করছেন একটি বৃদ্ধাশ্রমের। যেখানে অন্তত বিনা চিকিৎসায় একা একা মরতে হবে না। কথা বলার কেউ থাকবে। জীবনের শেষ দিনগুলো একটু শান্তিতে কাটবে তাঁর।
আজ বুধবার দুপুরে সনু মিয়ার বাড়িতে কথা হয় তাঁর সঙ্গগে। তিনি বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে তার বউ-বাচ্চা নিয়ে ঢাকায় থাকে। মানুসিক ভারসাম্যহীন একমাত্র মেয়ে থাকে তাঁর স্বামীর বাড়িতে। দুই বছর আগে স্ত্রীর মৃত্যু হয়েছে। এখন আমি একা। আমার খাবার আমাকেই রান্না করে খেতে হয়। কোন দিন খাওয়া হয়, কোনদিন হয় না। অসুস্থ হলে দেখার কেউ নেই আমার।’ কথাগুলো বলতে গিয়ে চোখের কোনে কষ্টের অশ্রু জমে সনু মিয়ার।
সনু মিয়া আরো বলেন, ‘আমার মত অসংখ্য অসহায় বৃদ্ধ মানুষ রয়েছে দেশে। এই বৃদ্ধদের জন্য সরকারের কিছু করা উচিৎ। শুধুমাত্র বয়স্ক ভাতা দিয়েই সরকার দায়িত্ব শেষ করছে। ব্যক্তি উদ্দ্যোগে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বৃদ্ধাশ্রম থাকলেও আমাদের এলাকায় তা নেই। তাই খোদাই এখন আমার একমাত্র ভরসা।’ অপর এক প্রশ্নের জবাবে সনু মিয়া বলেন, ‘স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের আমার দুরাবস্থার কথা জানিয়েছি, কিন্তু তাঁরা কোন ব্যবস্থা নেয়নি।’
সনু মিয়ার প্রতিবেশী সাংবাদিক রহিম রেজা বলেন, ‘সনু মিয়ার একটু মাথা গোঁজার ঠাঁই দরকার। এই বৃদ্ধ মানুষটির জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসা উচিৎ।’
এ বিষয় রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আফরোজা বেগম পারুল বলেন, ‘সনু মিয়ার কথা শুনে তাঁর বাড়িতে গিয়েছি। জেলা প্রসাশকের নির্দেশে টিন দিয়ে ঘর করে দেওয়া হচ্ছে। আমাদের পক্ষে যতটুকু করা সম্ভব, আমরা তা করব।’