স্টাফ রিপোর্টার :
পরিবেশ বিধ্বংসী কাজে জড়িত জনপ্রতিনিধিদের অপসারণ ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণার আইন প্রনয়নের দাবি জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস এন্ড পিস ফর বাংলাদেশ (এইচআরপিবি)। বিশ পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার সকালে ভার্চুয়াল সভায় সংগঠনের নেতৃবৃন্দ পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা দাবী উত্থাপন করে তা বাস্তবায়নের জন্য সরকারের কাছে আহ্বান জানান।
পরিবেশের ক্ষতিসাধন ও আইন অমান্য করার বিষয় তুলে ধরে মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী এ সংগঠনটি সরকারকে কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করে পরিবেশের ক্ষতি পুনঃরুদ্ধারে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান। বক্তারা পরিবেশ সংক্রান্ত শতশত জনস্বার্থের মামলায় আদালতের রায় ও নির্দেশনা বাস্তবায়ন না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বক্তব্য দেন সংগঠনের সেক্রেটারী অ্যাডভোকেট মো. ছারওয়ার আহাদ চৌধুরি, এখলাছ উদ্দিন ভুঁইয়া, মো. জাহাঙ্গীর হোসেন, মাহবুবুল ইসলাম, ইমরুল কাওসার, রিপন বাড়ৈ, ডিএজি কাজী মাইনুল হাসান, এএজি সামিউল আলম, সাংবাদিক কে এম সবুজ, মামুন আলিম, মো. তাজউদ্দিন, রফিকুল ইসলাম ও জাহিদুল হক।
সভাপতির বক্তব্যে অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে মহামারি করোনায় মানবজাতি যখন ভযাবহ দুঃসময় অতিবাহিত করছে, সেরকম সময় বিশ^ পরিবেশ দিবস পালন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও তাৎপর্যপূর্ণ। বিশেষ করে বিশ^ব্যাপী অপরিকল্পিত উন্নয়ন এবং ইকোসিষ্টেমের ওপর বিভিন্ন প্রকার ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে পরিবেশের যে মারাত্বক ক্ষতিসাধন করা হয়েছে, তা পুঃনরুদ্ধার ছাড়া মানবজাতি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারবে না। সে প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘ যথার্থই এ বছরের বিশ^ পরিবেশ দিবসের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করেছেন ‘ইকোসিষ্টেম পুনঃরুদ্ধার’।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘বিশ^ পরিবেশ দিবস’ আরও গুরুত্ব বহন করে। খাল, নদী, বিল, পাহার, পর্বত, বন জঙ্গল, পশুপাখি, প্রকৃতির এমন সমাহার আজ হারিয়ে যাচ্ছে। বিশে^ বায়ু দূষণে আমাদের রাজধানী ঢাকা প্রথম স্থানে থাকছে। অজ্ঞতা, অসতর্কতা এবং অপরিকল্পিত উন্নয়নের নামে সুন্দর ও প্রাকৃতিক পরিবেশে ভরপুর বাংলাদেশ আজ অনেকটা খুঁজে পাওয়া যায় না। এর অন্যতম কারণ প্রকৃতি ও পরিবেশের এ ক্ষতির সঙ্গে যারা জড়িত তারা বিত্তশালী, প্রভাবশালী, রাজনৈতিক ক্ষমতাশালী। অনেক অনেক ক্ষেত্রে পরিবেশ বিধ্বংসী কাজের সঙ্গে এবং রায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ক্ষেত্রে বিভিন্ন পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিরাও জড়িত, যার কারনে প্রশাসন থমকে যায়। এ থেকে উত্তরণের জন্য সংবিধানের আর্টিকেল ১০৮ একমাত্র হাতিয়ার হলেও তাও অনেকটা মুখ থুবরে পরেছে। রায় বাস্তবায়ন না হওয়ার বিষয়টি আরও স্পষ্ট হয়েছে কয়েকদিন আগে বর্তমান মাননীয় প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে। তাছাড়াও আমরা আইনজীবীরা প্রতিনিয়ত পরিবেশের বহু রায় হাতে নিয়ে ঘুরতে থাকি কিন্তু আগের মত আদালত অবমাননার হাতিয়ারকে কার্যকর হতে দেখি না। এমনকি কোন কোন ক্ষেত্রে প্রাকটিসের প্রথাও অনুসরণ করা হয় না।
সংগঠনের পক্ষ থেকে পরিবেশ রক্ষায় ৯ দফা দাবী উত্থাপন করে সরকারকে তা বাস্তবায়নের অনুরোধ জানান তিনি।
দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, পরিবেশ বিধংসি কাজের সাথে জড়িত যে কোন সংসদ সদস্য বা অন্য যে কোন জনপ্রতিনিধিদের পদ থেকে অপসারন ও নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষনা করার আইন প্রনয়ন করতে হবে। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনকে শক্তিশালি করে তাকে ক্ষমতায়ন এবং কমিশনকে ক্যাবিনেটের আওতায় পরিচালনা করতে হবে। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, জেলা, উপজেলায় প্রকৃতি ও পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে (প্রাকৃতিক দুর্যোগ ব্যাতিত) সংশ্লিষ্ট এলাকার কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত দায়বদ্ধ করার আইন পাস করতে হবে। পরিবেশ রক্ষায় কাজ করা পরিবেশবাদী, আইনজীবী, সাংবাদিক এবং সকল ব্যক্তির সুরক্ষা প্রশাসনিকভাবে নিশ্চিত করতে হবে। পরিবেশ অধিদপ্তরের লোকবল বৃদ্ধি, সকল জেলায় পর্যাপ্ত লোকবলসহ অফিস স্থ্াপন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে প্রয়োজনীয় আর্থিক বরাদ্ধ নিশ্চিত করতে হবে। নদীর পাশে যে কোন প্রজেক্ট বাস্তবায়িত করতে হলে আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুসারে সি এস রেকর্ড অনুসারে নদীর সীমানা নির্ধারণ করে তা সংরক্ষণ করতে হবে। পরিবেশের ক্ষতির করার কারনে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে জরিমানা বা সাজাপ্রাপ্ত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রতিষ্ঠান তাৎক্ষনিক বন্ধ ঘোষণার আইন প্রনয়ন করতে হবে। পরিবেশ সংক্রান্ত সকল বিভাগে দক্ষ, সৎ, কমিটেড এবং পরিবেশ নিয়ে পড়াশোনা করা ব্যক্তিকে নিয়োগ করতে হবে। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের বাজেট ৩ গুণ বৃদ্ধি করে পরিবেশ রক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা পালন করতে হবে।
জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ
বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীরা আ.লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে …