স্থানীয় প্রতিনিধি :
ঝালকাঠির নলছিটিতে পিকনিকে উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করায় বৃদ্ধ আবদুল জলিল হাওলাদার হত্যা মামলার আসামী ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পি হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার রাত ৮টার দিকে মিরহার গ্রামের বাড়ির পাশে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার রাতে এ ঘটনায় নলছিটি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।
নলছিটি থানার ওসি (তদন্ত) আবদুল হালিম তালুকদার জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে, বাড়ির পাশে একটি স্থানে লুকিয়ে আছে বাপ্পি। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
জলিলের পরিবারের অভিযোগ, প্রতিবেশী ও মগড় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুম হাওলাদারের ছেলে মগড় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি বাপ্পি হাওলাদার জলিল হাওলাদারকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। জলিল দীর্ঘ ৩৫ বছর সৌদি আরবে ছিলেন। পাঁচ বছর আগে দেশে ফেরেন তিনি।
পরিবার, পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, মিরহার গ্রামের উজ্জত আলী হাওলাদারের বাড়িতে পাঁচ দিনের পিকনিকের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে তিন দিন ধরে উচ্চ শব্দে গান বাজাচ্ছিল কয়েকজন যুবক। পাশে নামাজ পড়তে যাওয়া মসজিদের মুসল্লিরা তাদের উচ্চ শব্দে গান বাজাতে মানা করলেও তারা তা শোনেনি। অতিষ্ঠ হয়ে শুক্রবার রাতে একই বাড়ির জলিল তাদের উচ্চ শব্দে গান বাজাতে নিষেধ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পিকনিকে অংশ নেওয়া যুবকরা তাঁকে গালাগাল করে। এ নিয়ে তাদের সঙ্গে জলিলের কথা-কাটাকাটি হয়। এর জেরে যুবকরা লাঠিসোঁটা দিয়ে তাঁর ঘরের সামনে কিছু অংশ ভাঙচুর করে। এতে বাধা দিতে গেলে প্রতিবেশী বাপ্পি লাঠি দিয়ে জলিলের মাথায় আঘাত করে। এতে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে তারা।
জলিলের স্ত্রী মমতাজ বেগম অভিযোগ করেন, ‘বাপ্পি আমার স্বামীর সঙ্গে তর্কাতর্কি করলে আমি থামাতে যাই। তখন সে আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমি উঠে আসার আগেই আমার স্বামীর মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে। তাঁকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আমার স্বামীর হত্যাকারীর বিচার চাই। ’ তবে বাপ্পির বাবা, ইউপি সদস্য মাসুম দাবি করেন, ‘আমার ছেলে জলিলকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়। এতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। ’