স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলা ছাত্রদলের নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠন হয়েছে। কমিটির আহ্বায়ক ঢাকায় বসবাস করেন দাবি করে ছাত্রদলের একাংশ নতুন কমিটি প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের কেউ বলছেন, টাকার বিনিময়ে অযোগ্যদের স্থান দেওয়া হয়েছে। কারো অভিযোগ, এলাকায় থাকেন না, এমন যুবকদের কমিটির গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া হয়েছে। দুর্বল কমিটি ঘোষণা করায় ছাত্রদলের বড় একটি অংশ দুর্বার আন্দোলনে যাবেন বলে হুশিয়ারি দিয়েছে। প্রয়োজনে পাল্টা কমিটি গঠন করার কথা বলছেন অনেকে। এ কমিটি বাতিল করে উপজেলা বিএনপির নেতাদের পরামর্শে নতুন কমিটি গঠনের দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ। সাইদুল ইসলাম রনিকে আহ্বায়ক ও সুজন খানকে সদস্য সচিব করে ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি হয়েছে। এখানে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়েছে ৯ জনকে। গত ২৯ আগস্ট জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এ কমিটি অনুমোদন করে। বিষয়টি এতো দিন প্রকাশ পায়নি। বৃহস্পতিবার রাতে নতুন কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের ফেসবুকে কমিটির কাগজসহ একটি পোস্ট দেখে বিষয়টি জানতে পারে ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এর পরেই শুরু হয় তীব্র প্রতিক্রিয়া। কমিটির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ বেশিরভাগ ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। এর প্রতিবাদে শুক্রবার বিকেলে শহরের কলেজ রোডে বিক্ষোভ মিছিল করে।
জানা যায়, ২০১৩ সালের ১ নভেম্বর নলছিটি উপজেলা ছাত্রদলের কমিটি গঠন করা হয়। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সুপার ফাইভ কমিটির পর দীর্ঘ ৭ বছরেও হয়নি পূর্ণাঙ্গ কমিটি। সভাপতি পলাশ সজ্জন ও সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান সবুজ এখনো হাল ধরে আছে সংগঠনটির। এরই মধ্যে কেন্দ্র থেকে নতুন কমিটি গঠনের নির্দেশ আসে। সে অনুযায়ী সম্ভাব্য প্রার্থীদের জীবন বৃত্তান্ত জেলা ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দের কাছে দেওয়া হয়। যাদের নাম তালিকার শীর্ষে রয়েছে, তাদের পাশ কাটিয়ে অযোগ্যদের নাম দিয়ে একটি কমিটি গঠন প্রক্রিয়ার অভিযোগ ছিল জেলা ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ছাত্রদেল নেতা অভিযোগ করেন, অদৃশ্য ইশারায় জেলা ছাত্রদলের সভাপতি ও সম্পাদক ঢাকায় থাকেন, অচেনা, আন্দোলন সংগ্রামে নেই-এমন কাউকে আহ্বায়ক করছেন। এতে হতাশায় পড়েছেন ত্যাগী ও নিবেদিতরা। বর্তমান ছাত্রদল নেতৃবৃন্দ ও উপজেলা বিএনপিও চাইছে যোগ্য ও স্থানীদের দিয়ে কমিটি গঠন করতে।
উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান সবুজ বলেন, প্রাণের এ সংগঠনটি গতিশীল থাকার জন্য শহরের ছেলেদের দিয়ে কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। যারা ঢাকায় থাকেন, এলাকার কেউ চিনে না, এমন লোকদের কমিটিতে আনা হয়েছে, এটা কেউ মানবে না। কমিটি হতে হবে তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী। যাকে আহ্বায়ক করা হয়েছে সাইদুল ইসলাম রনি, সে ঢাকায় থাকেন। তাঁর বাড়ি উপজেলার রানাপাশা ইউনিয়নে। দলের সঙ্গে তাঁর কোন সম্পর্ক নেই। অথচ তাকেই আহ্বায়ক করা হয়েছে। নিশ্চই এর পেছেনে অর্থনৈতিক লেনদেন আছে। আমরা এ কমিটি মানি না। কমিটি বাতিল করা না হলে, আমরা পাল্টা কমিটি করবো।
সভাপতি পলাশ সজ্জন বলেন, আমাদের কমিটি ৭ বছর ধরে সুনামের সাথে দায়িত্ব পালন করছে। এখন নতুন নেতৃত্ব আসবে, এটাই চাই। কমিটি হতে হবে যোগ্যদের দিয়ে। কিন্তু যাদের নাম শুনিনি, তাদের দিয়ে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি দিয়ে দল চলতে পারে না।
জেলা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান বলেন, আহ্বায়ক কমিটিতে যোগ্যরা স্থান পেয়েছে। অনেকে না জেনেশুনে নানা কথা বলছে।
নলছিটি উপজেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আনিসুর রহমান খান হেলাল বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে ছাত্রদলের কেন্দ্র থেকে আমাদের কাছে মতামত চাওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী আমরা একটি কমিটির সুপারিশ করেছি। কিন্তু তা উপেক্ষা করে আহ্বায়ক কমিটি দেওয়া হয়েছে। যারা এলাকায় থাকে না, যাদের কোন অবস্থান নেই সে ধরণের লোক দিয়ে কমিটি করা হয়েছে। প্রয়োজনে আমরা যে তালিকা পাঠিয়েছি, তা দিয়েই ছাত্রদলের কার্যক্রম চালাবো।