স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠির নলছিটিতে অটোরিকশা উল্টে মায়ের কোল থেকে ছিটকে পড়ে দেড় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সোমবার দুপুরে উপজেলার ষাইটপাকিয়া বাজার-চাকলা সড়কের শহিদুল ইসলাম মেম্বারের বাড়ির সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর নাম সাজ্জাদ তাহা। সে প্রেমহার গ্রামের জাহিদ জোমাদ্দারের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জাহিদ জোমাদ্দার ও তাঁর স্ত্রী ছালমা বেগম তাদের দেড় মাস বয়সী ছেলেকে টিকা দেওয়ার জন্য দুপুরে প্রেমহার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যায়। টিকা প্রদান শেষে ষাইটপাকিয়া বাজার-চাকলা সড়ক দিয়ে অটোরিকশায় করে তাঁরা বাড়ি ফিরছিলেন। বাবা ছিলেন অটোরতশার সামনের সিটে এবং ভেতরে মায়ের কোলে বসা ছিল তাদের একমাত্রা ছেলে। সড়কটি খানাখন্দে ভরা থাকায় অটোরিকশাটি স্থানীয় শহিদুল ইসলাম মেম্বারের বাড়ির সামনে গেলে খাদে পড়ে উল্টে যায়। এ সময় মায়ের কোল থেকে দুই মাসের শিশু সাজ্জাদ তাহা ছিটকে পড়ে মাথায় আঘাত লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরে চিকিৎসকরা মৃত্যু ঘোষণা করেন। নিহত সাজ্জাদের বাবা জাহিদ জোমাদ্দার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে চাকরি করেন।
জাহিদ জোমাদ্দার বলেন, আমি আর আমার স্ত্রী ছেলেকে নিয়ে টিকা দিতে যায়। এটি ছিল তাঁর প্রথম টিকা। বাড়িতে যাওয়া আসার একমাত্র সড়কটি দীর্ঘ দিন ধরে খানাখন্দে ভরা। অটোরিকশায় করে ওই সড়ক দিয়ে বাড়ি যাওয়ার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। অটোরিকশা উল্টে গেলে আমার স্ত্রীর কোল থেকে ছেলে ছিটকে পড়ে যায়। মাথা ফেটে গিয়ে গুরুতর আঘাত লাগে তাঁর। দ্রæত তাকে বরিশাল নিয়ে আসলেও আর বাঁচাতে পারিনি। দুর্ঘটনায় এমন মৃত্যু কোনভাবেই মেনে নিতে পারছি না। আমার স্ত্রী ছেলের শোকে পাগলপ্রায়। আমরা ময়নাতদন্ত ছাড়াই মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে যাবো। এ দুর্ঘটনার জন্য অন্যকাউকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
ভৈরবপাশা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও প্রেমহার গ্রামের বাসিন্দা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমাদের সড়কটি ভাঙা। এই সড়ক দিয়ে যাতায়াত করা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষের পায়ে হাটাই দায়, তার ওপরে যানবাহন চলাচল তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু ঝুঁকিনিয়েও মানুষ এই পথ দিয়ে যাতায়াত করে। আমার বাড়ির সামনেই অটোরিকশা উল্টো মায়ের কোল থেকে পড়ে গিয়ে শিশুটি মারা গেলো। এ ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন সড়কটি অবরোধ করে রেখেছিল। আমরা গিয়ে পুনরায় সড়কটি যানচলাচলের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।
নলছিটি থানার ওসি মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, শিশুটি মায়ের কোল থেকে পড়ে মারা গেছে, তাদের পরিবার চাইছেন ময়না তদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করতে। বরিশাল সিটি কর্পেরেশনের কর্মকর্তারাও এ ব্যাপারে অনুরোধ করেছেন, তাই আমরা লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছি।