Latest News
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বিদ্যালয়টি

নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে বিদ্যালয়টি

স্থানীয় প্রতিনিধি : ঝালকাঠির রাজাপুরে বিশখালী নদীর ভাঙনে মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি বিদ্ধস্ত হয়েছে। এতে বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের অংশটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে যেকোনো সময় পুরো বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে চলে যাবে। ফলে অনিশ্চিত হয়ে পড়বে বিদ্যালয়ের তিন শতাধিক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া।

ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বর্ষা মৌসুম আসার আগেই ভাঙন শুরু হয়েছে বিশখালী নদীর বিভিন্ন স্থানে। তীব্র ভাঙনে বাদুরতলা লঞ্চ টার্মিনাল ও এর আশপাশের এলাকার সড়ক, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাদুরতলা বাজারের অধিকাংশ এরই মধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে শতাধিক বসতবাড়ি, একাধিক প্রাথমিক বিদ্যালয় ও বাদুরতলা জামে মসজিদসহ বেশকিছু স্থাপনা।

সরেজমিন বাদুরতলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, মঠবাড়ি ইউনিয়ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পূর্বপাশের অংশ এবং বাদুরতলা-পুখরীজানা-মানকিসুন্দর সড়কটি ভেঙে নদীগর্ভে চলে গেছে। এ ছাড়া বাদুরতলা-চল্লিশকাহনিয়া সড়কটিও নদীতে ভেঙে গেছে। এতে ওইসব গ্রামের হাজারো মানুষ বিপাকে পড়েছেন।

পুখরীজানা গ্রামের বাসিন্দা মো. শহিদ শরীফ বলেন, মঠবাড়ি ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ভেঙে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছে। ঘূর্ণিঝড় ফণীর প্রভাবে বিশখালীতে আগাম ভাঙন শুরু হয়েছে। বর্ষা মৌসুমে ভাঙনের তীব্রতা আরো বাড়বে। ভাঙনরোধ ও বিদ্যালয়টি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে একাধিকবার মানববন্ধন করে স্থানীয় প্রশাসন বরাবর স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তবে এখনো কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাথী আক্তার বলেন, বিদ্যালয়টি ভেঙে গেলে আমাদের পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যাবে। সামনে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা। তাই বিদ্যালয়টি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া একান্ত প্রয়োজন।

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. হৃদয় হোসেন বলেন, আমাদের এলাকায় এই একটি মাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বিদ্যালয়টি না থাকলে আমাদের ১০ কিলোমিটার দূরের বিদ্যালয়ে যেতে হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আইউব আলী বলেন, বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য একাধিকবার মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ কার্যকর কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. হায়দার খান বিদ্যালয়ের জন্য অন্যত্র জমি কেনার চেষ্টা করছেন।

মঠবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল সিকদার বলেন, বিদ্যালয়টি বাঁচাতে ও বিশখালীর ভাঙন বন্ধ করতে আমরা বহুবার প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের দারস্থ হয়েছি। তবে দুঃখের বিষয়, এখনো কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা বিদ্যালয়টি নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করছি। তবে অর্থাভাবে তা এখনো সম্ভব হয়নি।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সোহাগ হাওলাদার বলেন, ভাঙন থেকে বিদ্যালয়টি রক্ষার জন্য এরই মধ্যেই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। বিদ্যালয়টির পাঠদান যেন বন্ধ না হয়, সে বিষয়ে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদ ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের সাথে কথা বলেছি। বিদ্যালয়টি রক্ষা করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আন্তরিক প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে।