অনলাইন ডেস্ক : পরপর দ্বিতীয় রাতে অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে তারাবির নামাজ আদায়রত ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনী নৃশংস হামলা চালিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বের নেতারা।
জানা যায়, বুধবার রাতে প্রায় ২০ হাজার মুসল্লির রমজানের তারাবি আদায়কালে কয়েক ডজন সশস্ত্র ইসরায়েলি সেনা মসজিদে ঢুকে পড়ে। এটা ছিল আল-আকসায় ইসরায়েলি বাহিনীর এই রকম দ্বিতীয় অভিযান। মঙ্গলবার রাতে কয়েক ডজন ইসরায়েলি সেনা ভারী অস্ত্র নিয়ে মসজিদে হামলা চালায়, তারা স্ট্যান গ্রেনেড ব্যবহার করে এবং টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে। ওই সময় কয়েক হাজার পুরুষ, নারী, বয়স্ক মানুষ এবং শিশু তারাবি আদায় করছিল। কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, রাবার-কোটেড স্টিল বুলেটও ছোড়া হয়।
এ ঘটনার পর বুধবার হোয়াইট হাউস এক বিবৃতিতে বলেছে, এমন অব্যাহত সহিংসতায় যুক্তরাষ্ট্র ‘অত্যন্ত উদ্বিগ্ন’। আরো উত্তেজনা এড়াতে সব পক্ষের প্রতি যুক্তরাষ্ট্র আহ্বান জানাচ্ছে।
হোয়াইট হাউস ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কিরবি সাংবাদিকদের বলেছেন, ইসরায়েলি এবং ফিলিস্তিনি উভয়কেই একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সহিংসতা বেড়ে গেছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী মসজিদের ভেতরে লোকজনকে মারধর করছে- এ ছবি দেখে তিনি ‘মর্মাহত ও আতঙ্কিত।’
মসজিদের ভেতরে ধারণকৃত ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি সেনারা বারবার মুসল্লিদের লাঠি দিয়ে আঘাত করছে এবং আঘাতে আহত হয়ে লোকজন মেঝেতে লুটিয়ে পড়ছিল। এ সময় নারী ও শিশুদের সাহায্যের জন্য আর্তনাদ করতে শোনা যায়।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেছেন, মহাসচিব গুতেরেস পবিত্র ওই স্থানে ‘সহিংসতা এবং মারধর’ করার ছবি দেখেছেন এবং বলেছেন, এটি খুবই বেদনাদায়ক। কারণ ঘটনাটি পবিত্র এমন এক মাসে ঘটেছে যা কি না ইহুদি, খ্রিস্টান এবং মুসলমানদের জন্য পবিত্র এবং যেটি শান্তিপূর্ণ ও অহিংস হওয়া উচিত। ‘উপাসনার স্থানগুলো শুধু শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম পালনের জন্য ব্যবহার করা উচিত’ বলে যোগ করেন তিনি।
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়িপ এরদোগান বলেছেন, ‘আল-আকসা মসজিদকে পদদলিত করা মানেই হচ্ছে তারা আমাদের লাল রেখাটি অতিক্রম করেছে।’
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, ইসরায়েলি সরকার এসংক্রান্ত যে দায়সারাগোছের বক্তব্য দিচ্ছে তাতে তারা অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।
ট্রুডো বলেন, ‘আমাদের দেখতে হবে ইসরায়েলি সরকার তার দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন করছে। আমাদের দেখতে হবে সহিংসতা হ্রাস করা এবং মানুষ যেন এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধিতে বসবাস করে।’
আরব বিশ্ব ইসরায়েলের মঙ্গলবার রাতের অভিযানের ব্যাপক নিন্দা জানাচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাত বলেছে, ইসরায়েলের পদক্ষেপগুলো ‘এ অঞ্চলে উত্তেজনা ও অস্থিতিশীলতা বাড়িয়ে তোলার’ জন্য ঝুঁকিপূর্ণ।
আরব লিগও এই হামলার নিন্দা করেছে। আরব লিগের সেক্রেটারি জেনারেল আহমেদ আবুল গিত এক বিবৃতিতে বলেছেন, ইসরায়েলি সরকারের চরমপন্থা ফিলিস্তিনিদের সঙ্গে ব্যাপক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যাবে। সূত্র : মিডল ইস্ট আই