Latest News
শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ ।। ৮ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / ঝালকাঠিতে মাতৃত্বকালীন ভাতায় নাম ওঠাতে ঘুষ দাবি

ঝালকাঠিতে মাতৃত্বকালীন ভাতায় নাম ওঠাতে ঘুষ দাবি

স্টাফ রিপোর্টার :
চেয়ারম্যান হইতে ৩০ লাখ টাকা লাগে, আর মেম্বারের লাগে ৯ লাখ টাকা। সরকার টাকা দিবে, আর পাবলিক তা এমনি এমনি নিয়ে যাবে; তা কেমন করে হয়। আপনি আমার মাধ্যমে ৪০ হাজার টাকা নিবেন, আর পাঁচ হাজার টাকা খরচ করবেন না, তা-কি করে হয়। মেম্বারি করে লাভ কি, শুধু পাবলিক টাকা নিয়ে যায় আমরা কিছুই পাই না। তালিকায় (মাতৃত্বকালীন ভাতা) নাম ওঠাতে হলে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হবে। ঝালকাঠিতে এক ইউপি সদস্য এভাবেই গর্ভবতী নারীর কাছে মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নাম ওঠানোর জন্য পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ চেয়ে ফোনে এসব কথা বলেন। ইউপি সদস্যের নাম আবুল হোসেন মল্লিক। তিনি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য। নথুল্লাবাদ গ্রামের শাহনাজ বেগম নামে এক নারীর কাছে তিনি পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। এ সংক্রান্ত একটি ফোনালাপ ইতোমধ্যেই সোসালমিডিয়ায় ফাঁস হয়ে গেছে। ফোনালাপটি কালের কণ্ঠের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে।
ফোনে ওই ইউপি সদস্য বলেন, ‘এই পাঁচ হাজার টাকা দিয়ে সচিবকে দিতে হয়, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে দিতে হয়। আরো অনেককে টাকা দিতে হয়। এসব অফিসে টাকা না দিলে ফাইল ধরে না।
এদিকে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে ওই নারী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগে জানা যায়, সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ গ্রামের কুয়েত প্রবাসী তাজুল ইসলামের স্ত্রী শাহনাজ বেগম গর্ভবতী থাকাকালীন জানতে পারেন, সরকার মামৃত্বকালীন ভাতা দিচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যরা তালিকা করে উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়ে পাঠায়। এই তালিকা অনুযায়ী তাদের জনপ্রতি ২৮ হাজার ৮০০ টাকা ভাতা দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তিনি নথুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবুল হোসেন মল্লিককে ফোনে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ করেন। এসময় ইউপি সদস্য তাঁর কাছে তালিকায় নাম ওঠাতে পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। ওই নারী তাকে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর সকালে বিকাশ করে চার হাজার টাকা দেন। এ অবস্থায় ৭ মাস কেটে যায়। এর পরেও তাঁর নাম তালিকাভুক্ত করা হয়নি বলে ওই নারী অভিযোগ করেন। এদিকে শাহনাজ বেগমের মেয়ে সানজিদা আক্তার (১৮) গর্ভবর্তী হলে তাঁর নামও ভাতার তালিকায় ওঠানোর জন্য ফোন দেন ইউপি সদসকে। তাকে বলা হয়, আমার নামতো এখনো উঠেনি, এবার মেয়ের নামটা একটু তালিকায় দেওয়া যাবে কিনা। উত্তরে ইউপি সদস্য বলেন, দিতে পারি, তবে পাঁচ হাজার টাকা লাগবে। এ ঘটনায় ওই নারী ক্ষুব্ধ হয়ে বৃহস্পতিবার ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার শাখার উপপরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।
শাহনাজ বেগম বলেন, আমার কছা থেকে চার হাজার টাকা নিয়ে নাম তালিকায় উঠায়নায়। আমার অ্যাকাউন্ট (হিসাব খোলা) খোলার জন্য ৫০০ টাকা নিছে, কিন্তু নম্বর দেয়নায়। এখন আবার মেয়ের নাম তালিকায় ওঠানোর জন্য বলেছি, সেখানেও পাঁচ হাজার টাকা ঘুষ চায়। সরকার টাকা দিচ্ছে, আর ম্বেম্বররা গিলে খাবে, এটা কেমন কথা।
এ ব্যাপারে ইউপি সদস্য আবুল হোসেন মল্লিক বলেন, আমি কোন নারীর সঙ্গে ফোনে এ ধরণের কথা বলিনি। শাহনাজের স্বামীর সঙ্গে আমার একটি লেনদেন রয়েছে, এজন্য তারা আমাকে হেয় করতে চাইছে।
নথুল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান রেজাউল কবির বলেন, আমাদের ইউনিয়নে মাতৃত্বকালীন ভাতার জন্য ৮৯ জনের তালিকা করার জন্য বলা হয়েছে। আমি সদস্যদের ভাগ করে দিয়েছি। তালিকা অবশ্যই বিনা টাকায় করার কথা। আমি বিষয়টি তদন্ত করে দেখবো। দোষী হলে ইউনিয়ন পরিষদে রেজুলেশন করে তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হবে।
ঝালকাঠি মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. আলতাফ হোসেন বলেন, আমাদের অফিস সম্পূর্ণ দুর্নীতিমুক্ত। ইউপি সদস্যের ঘুষ চাওয়ার বিষয়টি আমি ফেসবুকে দেখেছি। ওই নারীর কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে, ইউপি সদস্যর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই নারী যদি ভাতা পাওয়ার উপযোগী হয়, তাহলে তাঁর নাম ভাতার তালিকায় ওঠানো হবে।

 

জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ

বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীরা আ.লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে

স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে …