স্টাফ রিপোর্টার :
প্রধান শিক্ষকের কাছে প্রাইভেট না পড়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে স্কুলে না আসার অজুহাতে দশম শ্রেণির এক ছাত্রকে বেধরক পিটিয়ে গুরতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আহত দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আল-আহাদের চিকিৎসা চলছে কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে । গত ১৫ এপ্রিল রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া এম.এল. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে এ নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার তালুকদার জানান, তদন্তে প্রধানশিক্ষক মো. ফজলুল হক আকনের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থী আহাদকে শারীরিক নির্যাতনের সত্যতা পাওয়া গেছে। রোববার প্রধানশিক্ষককে শোকজ নোটিশ প্রদান করা হবে। নির্যাতনের শিকার আল-আহাদের বাবা রাজাপুর উপজেলার পাড়সাতুরিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক মো. সোহেল মিয়া অভিযোগ করে বলেন, আমার ছেলে সাতুরিয়া এম.এল. মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির ছাত্র। এপ্রিল মাসের প্রথম দিকে আমার ছেলেকে বিড়ালে কামড়িয়ে গুরতর আহত করে। এর কয়েকদিন পর তার ডায়রিয়া হয়। এ কারণে সে ১০/১২ দিন স্কুলে যেতে পারে নাই। গত ১৫ এপ্রিল আমার ছেলে আহাদ স্কুলে গেলে বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক তাকে কক্ষে ডেকে নিয়ে স্কুলে না আসার কারন জিজ্ঞেস করে। আমার ছেলে তখন ডাক্তার দেখানোর কাগজ দেখিয়ে বলে আমি আমি অসুস্থ্য ছিলাম তাই স্কুলে আসতে পারিনি। তখন প্রধানশিক্ষক ক্ষিপ্ত হয়ে বলে, আজ তোকে পিটিয়ে সুস্থ্য করবো। এই কথা বলেই প্রধানশিক্ষক ফজলুল হক আকন বেত দিয়ে আহাদকে বেধরক পিটুনি দিতে থাকে। এতে আহাদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে গুরতর জখম হয়। সহপাঠীদের কাছ থেকে খবর পেয়ে সোহেল মিয়া স্কুলে এসে ছেলেকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী কাউখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। সোহেল মিয়া আরও অভিযোগ করেন, প্রধানশিক্ষক স্কুলে বসে ছেলে মেয়েদের ইংরেজী বিষয়ে প্রাইভেট পড়ান। আমার ছেলেকও তার কাছে পড়ার জন্য চাপ দিয়েছিল। তিনি পড়ান ৫০০ টাকায়। আমার ছেলে আহাদ অন্য একজনের কাছে ২০০ টাকায় প্রাইভেট পড়া শুরু করলে প্রধানশিক্ষক আমার ছেলের ওপর ক্ষিপ্ত হন। আমার মনে হয় সে কারনেই তিনি আমার ছেলেকে বেশী মেরেছেন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই। এ ব্যাপারে ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক এবং রাজাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবরে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত প্রধানশিক্ষক মো. ফজলুল হক আকন বলেন, দশম শ্রেণির ছাত্র আল-আহাদ গত সারেতিন মাসে মাত্র সাত-আটদিন স্কুলে এসেছে। অতিরিক্ত স্কুল বন্ধ দেয়ার কারনে আমি তাকে একটু শাসন করেছি। একটি মহল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে আমাকে হয়রানী করার চেস্টা করছে। হাসপাতালে ভর্তির মত কোন ঘটনা ঘটেনি।