স্টাফ রিপোর্টার :
ঝালকাঠি শহরতলীর কৃষ্ণকাঠি এলাকার স্বামী পরিত্যক্তা রাবেয়া খাতুন সংসারের খরচ বহন করতে পারছিলেন না। স্বামী চলে যাওয়ার পর দুই সন্তান ও মাকে নিয়ে পরেছেন বিপাকে। অন্যের বাড়িতে কাজ করতে করতে হাপিয়ে উঠেছেন তিনি। এতে তাঁর সংসার চলছিল না। তাঁর অসহায়ত্বের কথা শুনে পাশে দাঁড়িয়েছেন মানবিক যুবক ছবির হোসেন। অসহায় এই নারীকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে একটি সেলাই মেশিন, তাঁর দুই সন্তানকে পোশাক ও স্কুল ব্যাগ এবং বৃদ্ধ মাকে কাপড় ও কম্বল দিয়ে সহায়তা করেছেন। এতে যেমন খুশি দরিদ্র এই পরিবারটি, তেমনি সহযোগিতা করতে পেরে আনান্দিত ছবির হোসেন।
জানা যায়, পাঁচ বছর আগে রাবেয়া খাতুনকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায় তাঁর স্বামী। দীর্ঘ দিনেও তাঁর কোন খোঁজখর নিচ্ছে না। এ অবস্থায় দুই সন্তান ও বৃদ্ধ মাকে নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েন তিনি। সংসার চালাতে অন্যের বাসায় কাজ করতে হচ্ছে তাকে। আট বছরের একটি ছেলে মাদরাসায় পড়াশোনা করে। তাঁর পাঁচ বছরের একটি কন্যা সন্তানও রয়েছে। তাঁর বাবা বেঁচে নেই, কোন ভাইও নেই। যখন যে কাজ পেতেন, তা করেই সংসারের খরচ ও ছেলের পড়াশোনা চালাতেন তিনি। তাঁর অসহায়ত্বের খবর পেয়ে ঝালকাঠি শহরের মানবতার ফেরিওয়ালা নামে পরিচিত ছবির হোসেন প্রথমে খোঁজখবর নেন। পরে তিনি শনিবার বিকেলে ওই নারীকে স্বাবলম্বি করতে একটি সেলাই মেশিন কিনে দেন। তাঁর দুই সন্তানের জন্য নতুন পোশাক, স্কুলের ব্যাগ ও বৃদ্ধ মাকে কাপড় ও কম্বল দিয়ে সহায়তা করেন। এতেই খুশি রাবেয়া খাতুন। খুশিকে চোখে পানি চলে আসে তাঁর। এখন সেলাই মেশিন দিয়ে আয় করে সংসার চালাতে পারবেন তিনি। অসহায় এ পরিবারটিকে সহযোগিতা করতে পেরে আনন্দিত মানবিক যুবক ছবির হোসেন। ছবির হোসেনের উপহার পেয়ে তাঁর জন্য দুহাত তুলে দোয়া করেন মা ও মেয়ে। এভাবেই অসহায় মানুষের পাশে ছবির হোসেনকে দাঁড়ানোর আহŸান জানান দরিদ্র এই পরিবারটি।
ছবির হোসেন করোনার দুঃসময় থেকে ঝালকাঠিতে দুঃস্থ, অসহায়, শ্রমজীবী এবং করোনা আক্রান্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে মানবতার ফেরিওয়ালা উপাধি পেয়েছেন। তিনি বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা, খাদ্যসামগ্রী বিতরণ, অসহায় মানুষকে ঘর তুলে দেওয়া, ব্যবসার জন্য ভ্রাম্যমাণ ভ্যানগাড়ি উপহার দিয়ে সমাজের সেবা করে যাচ্ছেন। ছবির হোসেন চাচ্ছেন, ভিক্ষা নয়, কাজ করে খাও। অসহায় মানুষকে কাজের জন্য যেকোন সহযোগিতা করার আশ^াস দিয়ে যাচ্ছেন মানবিক এই যুবক। ভবিষ্যতেও তাঁর এ ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি।
জেলা শ্রমিক লীগের আহŸায়ক ছবির হোসেন বলেন, অসহায় স্বামী পরিত্যক্তা এক নারী আমার বাসায় এসেছিলেন আর্থিক সাহায্যের জন্য। আমি চিন্তা করে দেখলাম, নগদ টাকা না দিয়ে যদি পরিবারটির জন্য কিছু একটা করা যায় তাহলে এই পরিবার কারো কাছে হাত পেতে চলতে হবে না। এই চিন্তা থেকেই একটি সেলাই মেশিন ও কাপড় প্রদান করেছি। তিনি বলেন, মানুষের টাকা আছে। কিন্তু অসহায় মানুষের পাশে অনেক মানুষই দাঁড়ায়া না। টাকা দিয়ে কি হবে, মানুষ হয়ে মানুষের জন্য যদি কিছু করতে নাই পারি। তাই সমাজের সবাইকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াবার জন্য অনুরোধ করছি।
রাবেয়া খাতুন বলেন পাঁচ বছর হয়েছে আমার স্বামী আমাকে ছেড়ে চলে গিছে। আমি দুই সন্তান ও মাকে নিয়ে খুবই কষ্টে দিনযাপন করেছি। অন্যের বাড়িতে কাজ করতাম। খবর পেলাম ঝালকাঠি শহরের মানবতার ফেরিওয়ালা নামে ছবির হোসেন ভাই রয়েছেন। তিনি সবসময় অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ান। আমি তাঁর বাসায় গিয়ে আমার কথা বলেছি। তিনি বললেন, আপনি কি সেলাই মেশিন চালাতে পারেন, আমি বললাম হ্যাঁ। তখন ছবির ভাই জিজ্ঞাসা করল আপনার আর কি কি দরকার তখন তাকে বললাম একটি সেলাই মেশিন, আমার মায়ের পরনের কাপড়, আমার পরনের কাপড়, শীত বস্ত্র ও বাচ্চাদের জন্য কাপড় ওই স্কুল বা প্রয়োজন। তিনি বললেন চিন্তার কোন কারণ নেই, আপনি যা চেয়েছেন সব আমি একা দিব। আজকে আমি যা চেয়েছিলাম সব পেয়েছি। আমি বিশ্বাস করতে পারছি না এত টাকার জিনিসপত্র আমাকে তিনি দিবেন। আজ আমি অনেক খুশি। এখন কাজ করে আমি সংসার চালাতে পারবো।
জনতার কণ্ঠ 24 সংবাদ
বিএনপিতে অনুপ্রবেশকারীরা আ.লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে
স্টাফ রিপোর্টার : ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে …