স্পোর্টস ডেস্ক : মাঝারি পুঁজি নিয়ে ভারতের বিপক্ষে লড়াই করা সহজ কাজ নয়। তারপরেও ম্যাচ জমিয়ে তুলেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয় হলো ভারতের। ৪ উইকেটের হার নিয়ে রানার্সআপ হয়েই নিদাহাস ট্রফি টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষ করল বাংলাদেশ। এই নিয়ে তিন বা ততোধিক দলের অংশগ্রহণে আয়োজিত টুর্নামেন্টে পঞ্চমবারের মত রানার্সআপ হলো বাংলাদেশ। (সূত্র কালের কণ্ঠ অনলাইন) কলম্বোর আর. প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে ১৬৭ রানের টার্গেটে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা করে ভারত। মিরাজের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে ১ চার ২ ছক্কায় ১৭ রান তুলে নেন রোহিত শর্মা। সাকিব প্রথম ওভারে ৭ রান দেওয়ার পর নিজের দ্বিতীয় ওভারেও বাউন্ডারি খেয়ে শুরু করেন। অবশেষে সেই ওভারেই কাঙ্খিত ব্রেক থ্রু পায় বাংলাদেশ। বদলি ফিল্ডার আরিফুলের তালুবন্দি হয়ে ফিরেন ৭ বলে ১০ রান করা শিখর ধাওয়ান। ৩২ রানে প্রথম উইকেট হারায় ভারত।নিজের প্রথম ওভার করতে এসেই আঘাত হানেন রুবেল। সুরেশ রায়নার (০) ব্যাটে লেগে বল যায় মুশফিকের গ্লাভসে। কিন্তু মূল আম্পায়ার বলটি ওয়াইড ঘোষণা করেন। বাংলাদেশ রিভিউ নিলে স্পষ্ট দেখা যায় বলটি ব্যাট ছুঁয়ে মুশফিকের গ্লাভসে জমা হয়েছে। বলেই। বিধ্বংসী শিখর ধাওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন লোকেশ রাহুল। অবশেষে রাহুলকে (২৪) সাব্বিরের তালুবন্দি করে এই জুটি ভাঙেন রুবেল। ৩৫ বলে ক্যারিয়ারের ১৪তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ভারত অধিনায়ক রোহিত। ভারত অধিনায়ককে থামিয়ে টুর্নামেন্টে প্রথম শিকার ধরেন নাগিন নাচের আবিস্কারক নাজমুল ইসলাম অপু। ৪২ বলে ৫৬ রান করে মাহমুদ উল্লাহর তালুবন্দি হন রোহিত। দেখা যায় অপুর সেই বিখ্যাত নাগিন নাচ। জয় থেকে ভারত যখন ৩৪ রান দূরে, নিজের শেষ ওভারে ১ রান দিয়ে মণীষ পাণ্ডের (২৮) উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে তোলেন মুস্তাফিজ। রুবেলের করা পরের ওভারে ২২ রান নিয়ে ম্যাচ বের করে নেন দিনেশ কার্তিক। শেষ ওভারে ১২ রানের সমীকরণ থেকে ভারতকে প্রায় ছিটকে দিয়েছিলেন পার্টটাইম বোলার সৌম্য সরকার। শেষ বলে দরকার ছিল ৫ রান। ছক্কা মেরে দিনেশ কার্তিক ভারতকে শিরোপা এনে দেন। এর আগে নিদাহাস ট্রফির ফাইনালে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ১৬৬ রান তুলে বাংলাদেশ। ভালো শুরুর সম্ভাবনা জাগিয়েও টুর্নামেন্টের ‘আতংক’ হয়ে থাকা ওয়াশিংটন সুন্দরের বলে সুরেশ রায়নার হাতে ক্যাচ দেন ৯ বলে ১ চারে ১১ রান করা লিটন। দলীয় ২৭ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর অন্যতম ব্যাটিং ভরসা তামিম ইকবাল (১৫) যুজবেন্দ্র চাহালের বলে শার্দুল ঠাকুরের তালুবন্দি হন। একই ওভারের শেষ বলে সৌম্য সরকারের (১) বিদায়ে টাইগারদের তৃতীয় উইকেটের পতন হয়। এরপর প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মুশফিক এবং সাব্বির। কিন্তু চাহাল যেন আতংক হয়ে উঠেছেন। তার তৃতীয় শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরেন ১২ বলে ৯ রান করা মুশফিক। দলের এমন বিপদে এক প্রান্ত আগলে রাখেন সাব্বির রহমান। তার সঙ্গে জুটি বেঁধে আগের ম্যাচের নায়ক মাহমুদ উল্লাহ দলের স্কোর একশ পার করান। কিন্তু ভাগ্যটাই হয়তো খারাপ। ১৬ বলে ২১ রান করা মাহমুদ উল্লাহ রান-আউট হয়ে যান সাব্বির রহমানের সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে। প্রচণ্ড চাপের মাঝে দাঁড়িয়ে ৩৭ বলে ৫ চার ২ ছক্কায় ক্যারিয়ারের চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন ফর্মহীনতায় ভুগতে থাকা ‘টি-টোয়েন্টি স্পেশালিস্ট’ খ্যাত সাব্বির রহমান। অন্যদিকে আজ আবারও ব্যাট হাতে ব্যর্থ অধিনায়ক সাকিব। আগের ম্যাচের মতই আউট হন ৭ রানে। উনাদকাটের করা ১৯তম ওভারে বোল্ড হয়ে যান ৫০ বলে ৭ চার ৪ ছক্কায় ৭৭ রান করা সাব্বির। টি-টোয়েন্টিতে এটাই ছিল তার সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত স্কোর। আজও তিনি নিজেকে ছাড়িয়ে যেতে পারেননি না। পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান রুবেল হোসেন (০)। তবে হ্যাটট্রিক হয়নি উনাদকাটের। শেষের দিকে মুস্তাফিজকে নিয়ে হাত খুলে মারতে থাকেন মেহেদী মিরাজ। তার ৬ বলে ১৭* রানের ছোট্ট ঝড়ে বাংলাদেশের স্কোর দাঁড়ায় ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান।
বাংলাদেশ দল: সাকিব আল হাসান, মাহমুদ উল্লাহ, তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, লিটন দাস, মুশফিকুর রহিম, সাব্বির রহমান, মুস্তাফিজুর রহমান, রুবেল হোসেন, নাজমুল ইসলাম অপু, মেহেদী হাসান মিরাজ।
ভারত দল: রোহিত শর্মা, শিখর ধাওয়ান, লোকেশ রাহুল, সুরেশ রায়না, মনিশ পান্ডে, দিনেশ কার্তিক, ওয়াশিংটন সুন্দর, যুজবেন্দ্র চেহেল, বিজয় শঙ্কর, শার্দুল ঠাকুর, জয়দেব উনাদকাট।