Latest News
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ।। ৬ই পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
Home / জাতীয় / আ.লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর জন্মদিন আজ, নানা আয়োজনে পালিত

আ.লীগ নেতা আমির হোসেন আমুর জন্মদিন আজ, নানা আয়োজনে পালিত

কে এম সবুজ :
ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য সাবেক শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমুর ৭৯তম জন্মদিন পালিত হয়েছে। শুক্রবার সকালে শহরের টাউন হলের জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেক কেটে জন্মদিন পালন করেন নেতাকর্মীরা। এসময় দলের প্রবীণ এ নেতার দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার মো. শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট খান সাইফুল্লাহ পনির, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদার, জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সালাহউদ্দিন আহম্মেদ সালেক, সাংগঠনিক সম্পাদক তরুন কর্মকার, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট এম আলম খান কামাল, উপদপ্তর সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিল, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মহিন উদ্দিন তালুকদার, যুবলীগ নেতা রেজাউল করিম জাকির, হাফিজ আল মাহমুদ, জামাল হোসেন মিঠু, জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি শফিকুল ইসলাম শফিকসহ আওয়ামী লীগ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। দোয়া মোনাজাত পরিচালনা করেন আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মু. আব্দুর রশীদ। এদিকে ঝালকাঠি পৌরসভার মেয়র লিয়াকত আলী তালুকদারের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হয়।এছাড়াও নলছিটি পৌরসভা মিলনায়তনে আমির হোসেন আমুর জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও দোয়া মোনাজাতের আয়োজন করা হয়। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র তছলিম উদ্দিন চৌধুরীর উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
আমির হোসেন আমুর বর্নাঢ্য জীবন :
২০৪১ সালের এই দিনে ঝালকাঠির শেখের হাট ইউনিয়নের রাজপাশা গ্রামের সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন আমির হোসেন আমু। ছাত্র জীবনে আমির হোসেন আমু বরিশাল বজ্র মোহন কলেজের (বিএম কলেজ) ভিপি ছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ঠ সহচর ছিলেন তিনি। একাত্তোরে মহান মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি সংগঠকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩ সালে তিনি প্রথম জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
৭৫-এর ১৫ আগস্টের পর কেবল দীর্ঘ কারা নির্যাতনই ভোগ করেননি, আওয়ামী লীগ পুনর্গঠন ও বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে দলের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে স্বদেশে ফিরিয়ে আনতে অন্যতম ভূমিকা রাখেন। ষাটের দশকের ছাত্র আন্দোলনে তিনি অগ্রভাগে ছিলেন। ১৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে যুবলীগ পুনর্গঠনেও তার ভূমিকা অনেক। আমির হোসেন আমু ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী প্রচারে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে কারাবরণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ ভাষা দিবস উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মনোনীত হন। তিনি ১৯৫৯ সাল থেকে ১৯৬৪ সাল পর্যন্ত বরিশাল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৬২ সালের সর্বদলীয় ছাত্রসংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক হন। ১৯৬৫ সালে বরিশাল বিএম কলেজ থেকে বিএ এবং ১৯৬৮ সালে বরিশাল আইন মহাবিদ্যালয় থেকে এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। আমির হোসেন আমু ১৯৬৫ সালে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৬৬ সালে ৬ দফা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং ঊনসত্তরের গণআন্দোলনের অন্যতম রূপকার হিসেবে প্রচারের দায়িত্ব পালন করেন। আমির হোসেন আমু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে ¯œাতকোত্তর পাঠ শেষ করে আইন পেশার পাশাপাশি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে সম্পৃক্ত হন। তিনি ১৯৭০ সালে প্রাদেশিক পরিষদ নির্বাচনে বরিশাল সদর আসন থেকে নির্বাচিত হন। ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে তিনি বরিশাল, খুলনা, পটুয়াখালী, যশোর ও ফরিদপুরসহ পাঁচ জেলায় মুজিব বাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭৩ সালে ঝালকাঠি ও রাজাপুর নির্বাচনী এলাকা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। আমির হোসেন আমু আওয়ামী যুব লীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শেখ ফজলুল হক মণি ১৫ আগস্ট ঘাতকের হাতে নিহত হওয়ার পর তিনি যুবলীগকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ শুরু করেন। ১৯৭৮ থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও প্রেসিডিয়াম সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতি অবিচল পথচলা এই প্রবীণ রাজনীতিবিদ শেখ হাসিনার প্রথম শাসন আমলে (১৯৯৬) খাদ্যমন্ত্রী ও বিগত শাসন আমলে (২০১৪) শিল্পমন্ত্রী হিসেবে সফলতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।